এভারেস্ট জয়ী বাংলাদেশি কারা?


Momtaj Uddin Ahamad প্রকাশের সময় : মে ১৯, ২০২৪, ৩:৩৫ অপরাহ্ন /
এভারেস্ট জয়ী বাংলাদেশি কারা?

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৫ জন (মতান্তরে ৬ জন) মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। ২০১০ সালের ২৩ মে বাংলাদেশি হিসেবে সর্বপ্রথম মুসা ইব্রাহিমের এভারেস্ট জয় করেন। তবে ২০১৩ সালের পর বাবর আলীই একমাত্র বাংলাদেশি যিনি বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ জয় করতে সক্ষম হলেন।

রোববার (১৯ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় উঠে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবর আলী। তবে তার আগে আরও অন্তত ৪ জন এই মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। কেউ কেউ এই সংখ্যাটা ৫ জন বলেছেন। এরা হলেন- মুসা ইব্রাহীম, এম এ মুহিত, নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাজরীন এবং খালেদ হোসেন । তবে, ওয়াসফিয়ার পর খালেদ মাউন্ট এভারেস্টের পিক এ উঠেছিল কি না, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ বলেন, খালেদ পিক টাচ করে নামার পথে মারা গেছেন। তবে অধিকাংশের মতে, তিনি পিক টাচ করেননি।

এভারেস্ট জয় করেছেন যেসব বাংলাদেশি

মুসা ইব্রাহিম

পেশায় সাংবাদিক ও পর্বতারোহী মুসা ইব্রাহিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। ২০১০ সালের ২৩ মে বাংলাদেশ সময় সকাল ৫টা ১৬ মিনিটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন এবং লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান তিনি। পর্বত বিজয়ী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম ওঠে আসে তার হাত ধরেই।

মুসা ইব্রাহিম। ছবি: সংগৃহীত

নিশাত মজুমদার

প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে বেলা সাড়ে ১১টায় পৃথিবীর শীর্ষচূড়া এভারেস্টে আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। তার জন্ম ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরে। তিনি ঢাকার ফার্মগেটের বটমূলী হোম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন বলে জানা যায়। মাউন্ট এভারেস্ট বিজয়ী নারীদের তালিকায় প্রথমবারের মতো তালিকাভুক্ত বাঙালি নারী হিসেবে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন নিশাত।

নিশাত মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

এম এ মুহিত

নিশাত মজুমদারের পর ২০১১ সালের ২১ মে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন এম এ মুহিত। এছাড়া ২০১২ সালেও এভারেস্ট জয় করেন তিনি। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি, যিনি দুবার এভারেস্ট জয় করেছেন। মুহিত ২০১০ সালে এভারেস্ট অভিযানে গেলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সে সময় ব্যর্থ হন।

১৯৭০ সালের ৪ জানুয়ারি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুরে এম এ মুহিতের জন্ম। তিনি ঢাকার পোগোজ স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও  ঢাকা সিটি কলেজে পড়াশোনা করেছেন বলে জানা যায়।

এম এ মুহিত। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াসফিয়া নাজরীন

দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালে এভারেস্ট জয় করেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। ওই বছরের ২৬ মে সকাল পৌনে ৭টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন তিনি। এছাড়া ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে ৭টি পর্বত জয়ের রেকর্ড করেন বাঙালি এই নারী। দুঃসাহসী অভিযানের জন্য ওয়াসফিয়া নাজরীনকে ২০১৪ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বর্ষসেরা অভিযাত্রীর খেতাব দেয়া হয়।

১৯৮২ সালের ২৭ অক্টোবর  ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। ঢাকার স্কলাসটিকা স্কুল ও যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় এগনেস স্কট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। স্টুডিও আর্ট বিষয়েও তিনি স্কটল্যান্ডে কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন বলে জানা যায়।

ওয়াসফিয়া নাজরীন। ছবি: সংগৃহীত

খালেদ হোসেন

এভারেস্ট জয়ী খালেদ হোসেন বেশি পরিচিত সজল খালেদ নামে। তার এভারেস্ট বিজয় নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে সকাল আনুমানিক ১০টায় এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আবার অনেকে বলেন, সর্বোচ্চ শৃঙ্গের পিক টাচ করার আগেই মারা যান এই পর্বতারোহী।

খালেদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

বাবর আলী

বাংলাদেশি হিসেবে দীর্ঘ ১১ বছর পর এভারেস্টের চূড়া জয় করেছেন বাবর আলী। বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনি পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে সফলভাবে আরোহণ করেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। এরপর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। এভারেস্ট জয়ের আগে বাবর আলী ৯টি পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন।

ডা. বাবর আলী। ছবি: সংগৃহীত