‘মাতামুহুরীর বুক ও চরাঞ্চলে তামাক চাষের করালগ্রাস’


Momtaj Uddin Ahamad প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন /
‘মাতামুহুরীর বুক ও চরাঞ্চলে তামাক চাষের করালগ্রাস’

আলীকদমে বিশ্ব খাদ্য দিবসের আলোচনা সভায় বক্তাদের অভিযোগ

প্রেসক্লাব ডেস্ক:

‘দু’দশ আগে পার্বত্য উপজেলা আলীকদমের কৃষিক্ষেতে উৎপাদিত খাদ্যফসল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য উপজেলায় বিক্রির জন্য পাইকারী ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেতেন। মাতামুহুরী নদীর পলিযুক্ত বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে রবিশস্যের সমাহার হতো। খরস্রোতা মাতামুহুরীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো অসংখ্য জেলে পরিবার। এখন নদীর চরো ও বুকে তামাক চাষের করালগ্রাসে খাদ্যফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’ এমন অভিযোগ ও তথ্য উঠে এসেছে বিশ্ব খাদ্য দিবসের আলোচনা সভায়।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে ও কারিতাস বাংলাদেশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত র‌্যালী ও আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃদাঃ) রূপায়ন দেব।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি অফিসার সোহেল রানা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান তপাদার, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দন, প্রেসক্লাব সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদ ও কারিতাসের মাঠ কর্মকর্তা জেসমিন চাকমা প্রমুখ।

‘উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার’ প্রতিপাদ্যে সারাদেশের ন্যায় আলীকদমে অনুষ্ঠিত খাদ্য দিবসের আলোচনা সভায় তামাক চাষের ভয়াল বিস্তারের বিষয়ে আলোকপাত করেন প্রেসক্লাব সভাপতি।

তিনি বলেন, বিগত দু’দশের বেশী সময় ধরে খরস্রোতা মাতামুহুরীর পলিযুক্ত চরাঞ্চলে এবং নদীর বুকে জেগে উঠা চরে তামাক চাষের করালগ্রাস হচ্ছে। অন্যান্য খাল ও ঝিরিতেও প্রতিবছর বাড়ছে তামাক চাষ। এরফলে একদিকে যেমন খাদ্যফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে অন্যদিকে মাতামুহুরী নদীর জীব-বৈচিত্র্য সমুলে নষ্ট হচ্ছে। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। মরে গেছে মিঠা পানির সুস্বাদু মাছ।

এ বিষয়ে বক্তব্যে সহমত পোষণ করেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন। তিনি তামাক চাষ নিরূৎসাহিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন, আমরা তামাক চাষকে নিরূৎসাহিতর করার জন্য এ বছর কৃষকদের মাঝে দেড়শ’ মনের অধিক বাদাম ও ভূট্টা বীজ দিচ্ছি কৃষকদের।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাদ্যফসলের আবাদ বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। আমরা আগামী তামাক মৌসুম শুরুর আগেই পুরো আলীকদম উপজেলায় মাইকিং করে মাতামুহুরী নদী ও বিভিন্ন উপনদীর ঢালে ও বুকে তামাক চাষকে নিরূৎসাহিত করে মাইকিং করবো। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে কৃষি অফিস। সহযোগিত করবে উপজেলা প্রশাসন।

প্রতিবেদক: মমতাজ উদ্দিন আহমদ, সভাপতি, আলীকদম প্রেসক্লাব।