বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নে মিয়ানমার সীমান্তপথে আসা গরু নিয়ে আসার পথে মিজবাহ উদ্দীন (১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত আরেকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) সকালে নিহতের অপর সঙ্গীরা নিহত মিজবাহকে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িযোগে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ বেলা এগারটার সময় নিহতের মরদেহ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
শনিবার সকালে কিংবা শুক্রবার দিবাগত রাতের যেকোন সময় এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক খবরে জানা গেছে।
নিহতের পরিবার বলছে এটি হত্যাকা-। ঘটনার সাথে থাকা শ্রমিক বদি আলম বলছে, গাছের গুড়ি পড়ে মিজবাহ মারা যায়।
নিহত মিসবাহ উদ্দিন ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ইছহাক কারবারি পাড়ার বাসিন্দা মহিউদ্দিনের ছেলে। আহত গিয়াস উদ্দিন নয়াপাড়া ইউনিয়নের ইছহাক সর্দার পাড়ার বাসিন্দা মৃত জাকের আহাম্মদের পুত্র।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে তদন্তে গেছেন পুলিশের একটি দল। তারা ফিরে আসলে এ ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি হত্যা তা জানা যাবে।
নিহত ব্যক্তি মিছবাহ উদ্দিন ইউপি চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিনের প্রতিবেশী।
শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত কিভাবে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক তথ্য নেই নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিনের কাছেও।
তিনি জানান, ঘটনার রহস্য কি তা জানা যাবে আরো পরে। ঘটনাস্থলে পুলিশ তদন্তে গেছেন।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বলছে, তার ছেলেকে পরিকল্পতিভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর নিহত শ্রমিকের সহকর্মী বদি আলম বলছেন, ওই যুবক গাছ পড়ে মারা গেছেন। বেলা সাড়ে দশটার সময় নিহতের বাড়িতে গেলে লোকে লোকারণ্য দেখা যায়। সেখানে এ মৃত্যু নিয়ে একাধিক মত পাওয়া যায়।
নিহত মিজবাহ উদ্দিনের সাথে থাকা গরু শ্রমিক বদি আলম বলেন, মায়ানমার অবৈধ চোরাই পথে আসা গরু দরি পাড়া থেকে নাইক্ষছড়ি মসল্লাপাড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে আমরা ১০জন যাই। ভোর রাতে দরি পাড়ার পাহাড়ি পথ দিয়ে আসার পথে চারটি গরু খাদে পড়ে যায়।
এ সময় গরুগুলো উদ্ধার করতে গেলে শুকনো গাছ পড়লে মিসবাহ উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন আহত হয়। পরে তাদের নৌকা যোগে আনার সময় নৌকাতে মিসবাহ উদ্দিন মারা যায়।
নিহতের বাবা মহিউদ্দিন বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। গাছ পড়লে শরীরে এক পাশ থেতলে যাবে কিন্তু আমার ছেলের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আর আমার নিহত ছেলেকে নিয়ে যারা এসেছে তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক।
স্থানীয়দের সূত্র উল্লেখ করে যুগান্তর জানায়, আলীকদম উপজেলার করুকপাতা ইউনিয়নের দরি পাড়া এলাকায় মিয়ানমার থেকে সীমান্তপথে অবৈধভাবে আসা গরু ব্যবসা নিয়ে দুগ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মিজবাহ উদ্দীনের মৃত্যু হয়।
তার বাড়ি আলীকদমের নোয়াপাড়া এলাকায়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত গিয়াস উদ্দিন নামে আরেকজনকে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
আলীকদমের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, কুরুকপাতা ইউনিয়নে আমার এলাকার এক বাসিন্দা মারা গেছে। আরেকজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলীকদম থানার ওসি নাছির উদ্দিন জানান, দুপক্ষের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতাবস্থায় আরেকজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। হতাহতরা সবাই গরু ব্যবসার সাড়ে জড়িত শুনেছি।
আপনার মতামত লিখুন :